বাংলাদেশে গাড়ি লোন (Car Loan) নিতে হলে ডাউন পেমেন্ট এবং ইএমআই (EMI – Equated Monthly Installment) সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা থাকা জরুরি। নিচে এই বিষয়গুলো বিস্তারিত ব্যাখ্যা করা হলো:
ডাউন পেমেন্ট (Down Payment):
- ডাউন পেমেন্ট মানে কি?
ডাউন পেমেন্ট হলো গাড়ি কেনার সময় ব্যাংক বা লোন প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানকে এককালীন পরিশোধ করা অর্থ। এটি মূলত গাড়ির মোট মূল্যের একটি নির্দিষ্ট শতাংশ হয়ে থাকে। - ডাউন পেমেন্ট কত দিতে হয়?
বাংলাদেশে সাধারণত গাড়ির মূল্যের ২০%-৩০% পর্যন্ত ডাউন পেমেন্ট দিতে হয়।
উদাহরণ:
যদি একটি গাড়ির মূল্য হয় ২০ লাখ টাকা এবং ডাউন পেমেন্ট ২৫%, তাহলে আপনাকে শুরুতেই দিতে হবে ৫ লাখ টাকা।
ইএমআই (EMI – Equated Monthly Installment):
- ইএমআই মানে কি?
ইএমআই হলো মাসিক কিস্তির মাধ্যমে লোন পরিশোধ করার পদ্ধতি। এতে আপনার লোনের আসল টাকা এবং সুদের টাকা অন্তর্ভুক্ত থাকে। - ইএমআই কিভাবে কাজ করে?
ব্যাংক বা লোন প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান আপনার লোনের সময়কাল (যেমন ৩ বছর, ৫ বছর) এবং সুদের হার (Interest Rate) অনুযায়ী ইএমআই নির্ধারণ করে।
উদাহরণ:- লোনের পরিমাণ: ১৫ লাখ টাকা (গাড়ির মূল্য ২০ লাখ, ডাউন পেমেন্ট ৫ লাখ)।
- সময়কাল: ৫ বছর (৬০ মাস)।
- বার্ষিক সুদের হার: ১০%।
এই তথ্য অনুযায়ী ইএমআই হবে প্রায় ৩১,৮৭৫ টাকা প্রতি মাসে। (সুনির্দিষ্ট হিসাব করার জন্য ইএমআই ক্যালকুলেটর ব্যবহার করা যেতে পারে।)
ডাউন পেমেন্ট এবং ইএমআই-এর মধ্যে সম্পর্ক:
- বেশি ডাউন পেমেন্ট দিলে লোনের পরিমাণ কমে যায় এবং ইএমআইও কম হয়।
- কম ডাউন পেমেন্ট দিলে লোনের পরিমাণ বেশি হবে, ফলে ইএমআইও বেশি হবে।
গাড়ি লোন নেওয়ার ধাপ:
- লোন প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান বাছাই: ব্যাংক (যেমন ব্র্যাক ব্যাংক, ডাচ্-বাংলা ব্যাংক) বা ফাইন্যান্স কোম্পানি নির্বাচন করুন।
- যোগ্যতা যাচাই: আপনার আয়, চাকরি বা ব্যবসার ধরণ, এবং ক্রেডিট স্কোর যাচাই করবে।
- ডাউন পেমেন্ট ব্যবস্থা: নির্ধারিত শতাংশ টাকা প্রদান করুন।
- লোন আবেদন: প্রয়োজনীয় নথি (জমির দলিল, জাতীয় পরিচয়পত্র, আয় সনদ ইত্যাদি) জমা দিন।
- ইএমআই পরিশোধ: প্রতিমাসে নির্ধারিত তারিখে ইএমআই জমা দিন।
পরামর্শ:
- লোন নেওয়ার আগে সুদের হার এবং শর্তাবলী ভালোভাবে বুঝে নিন।
- প্রয়োজন হলে অনলাইন ইএমআই ক্যালকুলেটর ব্যবহার করে খরচ অনুমান করুন।
- লোন নেওয়ার আগে মাসিক আয় ও ব্যয়ের সাথে মিলিয়ে ইএমআই পরিকল্পনা করুন।